তালতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার তালতলীতে ৫শ’ টাকার বিনিময়ে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট। অনেক দিন ধরে একটি প্রতারক চক্র তালতলী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়োগ প্রাপ্ত শ্রমিকদের ৫শ’ টাকার বিনিময় এই সার্টিফিকেট বিক্রি করে আসলেও স্বাস্থ্য বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। জানা যায়, করোনা ভাইরাসের কারণে বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলায় একটি কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রায় আট মাস বন্ধ থাকার পরে গত জানুয়ারি মাসে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এই অল্প কিছু দিনে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করছেন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। এসব শ্রমিকদের করোনা টেস্ট করে কাজে ঢুকতে হয়। এ সময় তারা তালতলীর নিশানবাড়ীয়া চেয়ারম্যান বাজারের ইব্ররাহিম শেখ নামের এক ব্যক্তির কম্পিউটারের দোকান থেকে ভুয়া করোনা মুক্ত সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছেন। শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই সার্টিফিকেট নিয়ে তারা যথারীতি কাজে যোগ দিচ্ছেন। কাজে যোগদানের পূর্বে তাদের ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে থাকার কথা থাকলেও তাদেরকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে না। এই সকল শ্রমিকরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাহিরে চা-পানের দোকানে আড্ডা দেয়ায় করোনা ভাইরাস ঝুঁকিতে স্থানীয়রা। শ্রমিকদের কোনো রকমের করোনা টেস্ট না করে কম্পিউটারের দোকান থেকে এডিট করে ভুয়া সনদ তৈরি করে কাজে যোগদানের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী। একই সাথে ভুয়া সার্টিফিকেট বিক্রি চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী। প্রতারক চক্রের অন্যতম ইব্রাহিম শেখ উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজার নামের একটি বাজারে কম্পিউটারের দোকানে মেমোরি লোড এর কাজ করে। পাশাপাশি ফটোশপের কাজ, ফটোশপকে পুঁজি করে ভুয়া করোনার সার্টিফিকেট তৈরি করে ৫০০ টাকায় বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ। ইব্রাহিম শেখ এর কাছ থেকে ভুয়া করোনার সার্টিফিকেট ক্রয় করা এক ভুক্তভোগী মো. আউয়াল হোসন জানান, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি নেওয়ার জন্য করোনা টেস্টের দরকার হয় কিন্তু আমি না বুঝে ৫০০ টাকা দিয়ে ভুয়া রিপোর্ট কিনেছিলাম। এ বিষয়ে ইব্রাহিম শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার কাছে এলে টাকার বিনিময়ে করোনা টেস্টের রিপোর্ট তৈরি করে দেই। তালতলী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. ফায়জুর রহমান হিমেল বলেন, আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। একটি চক্র করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে প্রতারণা করছে। বিষয়টি লিখিত ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, কম্পিউটারে দোকানে করোনার সার্টিফিকেট দেয়াটা মূলত প্রতারণা। তদন্তে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply